সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীতে মিথ্যা অপবাদে বন্ধুর বিয়ে ভাঙা ও বোনের নামে অপবাদ দেওয়ার ঘটনার জেরে মোর্শেদ ইসলাম (৩৩) নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়েছে। গাঁজা সেবনের জন্য নির্জন স্থানে নিয়ে ওই যুবককে হত্যা করা হয়। পরে ঘটনাটি আড়াল করতে সেখান থেকে আরও দুরে লাশ পুতে রাখা হয় বালুব নিচে।
গত ২৪ আগস্ট জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার উত্তর দুরাকুঠি বাসোপাড়া গ্রামের এঘটনায় পুৃলিশ লাশ উদ্ধার করে হত্যা রহস্য উদঘাটন করে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকায় চার যুবককে গ্রেফতার করেছে। গত ২ অক্টোবর দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. গোলাম সবুর।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, কিশোরগঞ্জ উপজেলার উত্তর দুরাকুটি মাস্টারপাড়া গ্রামের মামুনুর রশিদের ছেলে বাদশা আলমগীর (৩১), বাসোপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে ইব্রাহিম ইসলাম (১৯), নুরুজ্জামান পেলকু মেম্বারের ছেলে সেলিম মিয়া (২৭) ও ময়নাকুড়ি গ্রামের মামুদ আলীর ছেলে আনারুল ইসলাম (৩০)। তারা সকলে নিহত মোর্শেদুলের বন্ধু এবং মাদকসেবি।
পুলিশ সুপার মো. গোলাম সবুর জানান, নিহত মোর্শেদুল ও গ্রেফতারকৃত আসামীরা গাজাসেবী ছিল। তারা একসঙ্গে গাঁজা সেবন করতেন। একাধিক জনের টাকা লেনদেনের বিরোধ ও ইব্রাহিমের বোনের পালিয়ে বিয়ে করার অপবাদ দেওয়া এবং মিথ্যা তথ্যে বন্ধু সেলিমের বিয়ে ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগ ছিল মোর্শেদুলের বিরুদ্ধে। এরই জেরে তারা মোর্শেদুলকে শায়েস্তার পরিকল্পনা করেন। উক্ত পরিকল্পনায় গত ২৪ আগস্ট রাতে গাঁজা সেবনের জন্য মোর্শেদুলকে ডেকে নেন ইব্রাহীম। সেখানে অন্যরা উপস্থিত হন। এরপর তারা এলোপাতারি মারপিট ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মের্শেদুলকে হত্যা করে। এরই মধ্যে মোর্শেদুলের লিঙ্গ কর্তন করে বালুর নিচে পুতে রাখেন ইব্রাহিম। এরপর তারা মৃতদেহটি বালুর নিচে পুতে রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আরও জানান, ঘটনার তিনদিন পর এলাকার কারাবালা নামক স্থান থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ে এক ব্যাক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশ এবং পরিবারের পর্যবেক্ষণে লাশটি মোর্শেদুলের বলে শনাক্ত হয়। এঘটনায় হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনসহ জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চালায় পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৩ ও সেপ্টেম্বর বাদশা আলমগীর ও ইব্রাহিম এবং ২৭ সেপ্টেম্বর সেলিম ও আনারুলকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে ইব্রাহিম, সেলিম ও আনারুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিরুল ইসলাম, মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ সারোআর আলম, কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ রাজীব কুমার রায়, নীলফামারী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তানভীরুল ইসলাম প্রমুখ।